বিশ্বব্যাপী প্রতি আট সেকেন্ডে
একজন করে মানুষ মারা যাচ্ছে
ডায়াবেটিস সংক্রান্ত রোগে।
ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের
হিসাব মতে ২০১১ সালে সারা
পৃথিবীতে ডায়াবেটিক রোগীর
সংখ্যা ছিল ৩৫ কোটিরও বেশী
২০৩০ সালের মধ্যেই যা দ্বিগুণ
হওয়ার আশংকা আছে।
বাংলাদেশ ডায়বেটিক
এসোসিয়েশন-এর তথ্য অনুযায়ী
বাংলাদেশে প্রায় ৮০ লাখ
মানুষ ডায়াবেটিস-এ আক্রান্ত
যা প্রতি বছর ৫-৬ শতাংশ হারে
বাড়ছে।
ডায়াবেটিস হলো এমন এক
শারীরিক অবস্থা যখন রক্তে
সুগারের মাত্রা বেশী থাকে- হয়
প্যানক্রিয়াস যথেষ্ট পরিমাণ
ইনসুলিন উৎপন্ন করতে পারে না
অথবা কোষগুলো উৎপাদিত
ইনসুলিনে কোন প্রতিক্রিয়া
দেখায় না। আর এই হাই সুগারের
কারণেই দেখা যায় ডায়াবেটিস
এর চিরচেনা লক্ষণ-বারংবার
মূত্রবেগ, ক্ষুধার এবং তৃষ্ণার
আধিক্য। ডায়াবেটিস মূলত তিন
ধরনের হয়ে থাকেঃ
*টাইপ ১ ডায়াবেটিসঃ শরীর যখন
প্রয়োজনীয় ইনসুলিন উৎপাদন
করতে পারে না তখন তাকে টাইপ
১ ডায়াবেটিস বলে।
*টাইপ ২ ডায়াবেটিসঃ আর শরীর
যখন উৎপাদিত ইনসুলিন ব্যবহার
করতে পারে না তখন তাকে টাইপ
২ ডায়াবেটিস বলে।
*আর যখন কোন গর্ভবতী নারীর
পূর্বের কোন ডায়াবেটিসের
ইতিহাস না থাকা সত্ত্বেও
গর্ভকালীন সময় হঠাৎ সুগার
বেড়ে যায় তখন তাকে
গেস্টেশনাল ডায়াবেটিস বলে।
হোমিওপ্যাথিতে যেহেতু
রোগীকে দেখে এবং রোগের
লক্ষণ বুঝে ঔষধ দেয়া হয়। তাই
ডায়াবেটিসের মত রোগের
ক্ষেত্রেও লক্ষণ ভেদে বেশ
কয়েকটি ঔষধ প্রেসক্রাইব করা
হলো।
*ফসফরাস:
টিউবারকুলিনিক রোগী, লম্বা,
নার্ভাস বা দুর্বল চিত্ত । প্রচন্ড
বিষণ্ন এবং স্ট্রেসড।
ডায়াবেটিক রোগীর কিডনী আর
লিভারের জন্য এই ঔষধ কার্যকর।
*সিজিজিয়াম জাম্বো:
শর্করাযুক্ত মূত্র অধিক পরিমাণে
ও বার বার হয়। প্রবল তৃষ্ণা,
দুর্বলতা বোধ। শরীর ক্রমশ কৃশ হয়।
ডায়াবেটিসের একটি উৎকৃষ্ট ঔষধ
হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
*ইউরেনিয়াম নাইট্রিকাম:
ক্ষুধা তৃষ্ণার মাত্রা বেড়ে যায়।
প্রচুর পরিমাণে খাওয়া সত্ত্বেও
শরীর ক্রমশ কৃশ ও দুর্বল হতে
থাকে। পেট ফাঁপে।
*অ্যাব্রোমা অগস্টা:
এই ঔষধের মূল লক্ষণ হলো
শর্করাযুক্ত বহুমূত্র, অধিক
পরিমাণে ও বার বার প্রস্রাব।
প্রস্রাব কখনো ঘোলা আবার
কখনো স্বচ্ছ, আঁশটে গন্ধ, মূত্র
ধারণে অক্ষমতা, কখনো অসাড়ে
প্রস্রাব হয়। প্রস্রাবের পরেই
পিপাসা। মুখ শুকিয়ে আসে।
ক্রমশ দুর্বলতা, মাথা ঘোরা,
অনিদ্রা, কোষ্ঠবদ্ধতা, খিটখটে
মেজাজ-এসবের প্রকোপও দেখা
যায়।
*অ্যাসিড অ্যাসিটিকাম:
গায়ের ত্বক ফ্যাকাশে দেখায়।
প্রবল পিপাসা, গায়ে জ্বালা আর
অস্থিরতা।
*ল্যাকট্রিক অ্যাডিস:
শর্করাযুক্ত প্রস্রাব, অধিক
পরিমাণে ও ঘন ঘন হয়।
কোষ্ঠকাঠিন্য। পায়ে
দুর্গন্ধবিহীন ঘাম হয়।
*ক্রিয়োজোট:
শর্করাযুক্ত প্রস্রাব খুব ঘন ঘন
অধিক পরিমাণে হয়। রাতে বৃদ্ধি,
প্রস্রাবের বেগ নিয়ন্ত্রণ করতে
পারে না।
*এসিড ফসঃ
স্নায়বিক দুর্বলতা, প্রবল
পিপাসা,শরীর ক্রমশ কৃশ ও দুর্বল
হয়। ঘন ও সাদা প্রস্রাবের
ক্ষেত্রে এসিড ফস খুবই উপকারী।
*হিলোনিয়াস ডায়োঃ
শর্করাহীন স্বচ্ছ পানির মত প্রচুর
প্রস্রাব, ঘুম ঘুম ভাব, বৃক্ক প্রদেশে
ব্যথা।
*অ্যানাথিরামঃ
পিপাসা ও দুর্বলতাসহ অধিক
পরিমাণে প্রস্রাব, সবসময় মনে হয়
প্রস্রাব হবে।
এছাড়াও লক্ষণভেদে সিকেলি,
নেট্রাম মিউর, আর্জেন্টাম মেট,
কস্টিকাম, পালসেটিলা,
নেট্রাম সালফ, আর্সেনিক
এলবাম, অপিয়াম এসব
হোমিওপ্যাথিক ঔষধ ব্যবহৃত হয়ে
থাকে।
তবে অভিজ্ঞ চিকিৎসকের
পরামর্শ ছাড়া কোন ঔষধই
গ্রহণকরা উচিত নয়। নিয়মিত
ডাক্তারের পরামর্শ নিন এবং
রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে
রাখুন। ভেজালযুক্ত খাবার, ফাস্ট
ফুড বা এলকোহল জাতীয় ক্ষতিকর
দ্রব্য সেবন থেকে বিরত থাকুন।
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন এবং
নিয়মিত কিছুটা হলেও হাঁটুন।
Wednesday, November 9, 2016
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে হোমিও ঔষধ।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment